পৃথিবীর অনেক দেশই আজ সার্বক্ষণিক সন্ত্রাসের হুমকির মুখে সময় পার করছে। এই সন্ত্রাসী উৎপাত বহু বছর যাবৎ তাদের ধূর্ত প্রকৃতির গুপ্ত হামলা ও প্রাণঘাতী কৌশলের মাধ্যমে পৃথিবীর অনেক পুরুষ, মহিলা, শিশু, গ্রাম্য লোক ও সেনাবাহিনীর সেনাদের হঠাৎ ও অদেখা মৃত্যু বা পঙ্গুত্বের কারণ হিসেবে কাজ করে চলেছে। এর বিপরীতে যে প্রতিরোধ ব্যবস্থাগুলো নেয়া হয়েছে সেগুলো কখনই প্রকৃত সমাধান উপস্থাপন করেনি। সন্ত্রাসের রক্তাক্ত কার্যক্রম অতীতে যে দেশগুলোকে আক্রান্ত করেছিল আজও সেখানে তারা তাদের ধূর্ত প্রকৃতির সন্ত্রাসী কৌশল প্রয়োগ করে চলেছে।
পৃথিবীব্যপী আজ যে কাপুরুষোচিত আঘাত ও ত্রাস ছড়ানো হচ্ছে নিয়মিতই তার নিন্দা করা হচ্ছে এবং প্রতিটি নতুন আক্রমনই অভিশপ্ত হচ্ছে। কিন্তু প্রতিনিয়ত সন্ত্রাসীর হামলার নিন্দা করে কোন উদ্দেশ্যটি হাসিল হয়েছে? সন্ত্রাসী হামলার স্বীকার দেশগুলোতে শুধু হামলাকারীদের অভিযুক্ত করা বা নিন্দা করার মাধ্যমে কখনও কোন সুনির্দিষ্ট সমাধান দেয়া সম্ভব হয়েছে কি? কখনও এটা নিত্যনতুন সন্ত্রাসী আঘাত প্রতিহত করতে পেরেছে? সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে শুধু মুখে সমালোচনা করা কোন সুনির্দিষ্ট সমাধান নয় এবং সম্ভবত এই ধরণের আঘাতের যে সকল জবাব দেয়া যেতে পারে তার মধ্যে দূর্বলতম। সন্ত্রাসের প্রকৃত জবাব দিতে গেলে দরকার বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নেয়া। সন্ত্রাসকে সমূলে উৎপাটনের জন্য দরকার সন্ত্রাসের আদর্শের গভীরে প্রবেশ করা। এই পদক্ষেপ নেয়া তখনই সম্ভব হবে যখন কমিউনিস্ট ত্রাসের উৎপাদনের ক্ষেত্রগুলোকে শুকিয়ে দেয়া যাবে।
সন্ত্রাসীদের একটি দর্শণ আছে। সে দর্শণটি হল দ্বান্দিক বস্তুবাদ। এটির মূল ডারউইনবাদী শিক্ষায় প্রোথিত। যদি ডারউইনবাদী শিক্ষা বিলুপ্ত করা না যায় এবং এর মাধ্যমে মার্ক্সিজম ও বস্তুবাদকে উৎখাত করা না যায় তাহলে এটি প্রতিনিয়ত সন্ত্রাসকে উসকে দিতে থাকবে। এজন্য এই দর্শণকে সম্পূর্ণ উৎখাত করা এবং এই আদর্শের ভিত্তি তথা ডারউইনবাদের বিপরীতে মানুষকে শিক্ষিত করা আজ জরুরী হয়ে পরেছে।
একদিকে সন্ত্রাসের নিন্দা করা ও সন্ত্রাসের স্বীকারদের জন্য দু:খ করা অপর দিকে স্কুলগুলোতে ডারউইনবাদ শিক্ষা দেয়া একটা মারাত্মক ভুল। ডারউইনবাদ কমিউনিস্ট ত্রাস কে উৎসাহিত করা ছাড়া আর কোন কাজ সম্পাদন করে না। ডারউইনবাদ কমিউনিস্ট আদর্শের উৎসমূলে আছে জেনেও এর প্রতি অবজ্ঞা করা হল স্বয়ং সন্ত্রাসবাদের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করা। যতক্ষন স্কুলগুলোতে ডারউইনবাদ শিক্ষা দেয়া হবে ততক্ষণ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঘৃণা পোষণ করে কোন লাভ নেই।
ডারউইনবাদী আদর্শ একটি পুরোনো তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে নির্মিত। এটি গত ১৫০ বছর যাবৎ রক্তক্ষরণ করে চলেছে এবং এর মিথ্যা প্রচারণার মাধ্যমে মানুষকে ধোকা দিয়ে যাচ্ছে। প্রতিটি স্কুলের প্রতিটি তরুণকে এটা শেখানো ও দেখিয়ে দেয়া দরকার যে এই তত্ত্বটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ধোকার উপর প্রতিষ্ঠিত । তাদেরকে অবশ্যই জানাতে হবে যে দ্বান্দিক বস্তুবাদের দর্শণ এবং এর ধরে নেয়া বৈজ্ঞানিক ভিত্তি ডারউইনবাদ হল কতগুলো মিথ্যা বিশ্বাস। এরপরই কেবল বিশ্বময় সন্ত্রাসবাদের বিপরীতে বাস্তবমুখী ও কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়া যাবে। শুধুমাত্র তখনই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাগুলো স্থায়ী হবে এবং স্থায়ী ফল আনবে। অন্য কোন কৌশলই এই প্রকাশ্য আক্রমনের সমাপ্তি টানতে পারবে না। সন্ত্রাসকে বন্ধ করতে হলে এর অত্যাবশ্যক ধমণীগুলোকে কেটে ফেলতে হবে এবং এর বুদ্ধিবৃত্তিক কাঠামোকে ভেঙ্গে দিতে হবে।